ক্ষণ

ঘড়ির ব‍্যাটারীটা
শেষ হয়ে গেলে
সময় যায় থমকে
শুধু ওটারই

পথ চলতে চলতে আজ
থমকে গিয়েছো তুমি
তোমার যে শেষ আয়ু
আমাদের হায়াত এখনো বাকি
আরো দৌড়াতে হবে

এক সময় ক্লান্ত পড়বো দাড়িয়ে
হৃদের স্পন্দন কমবে
ক্ষুদ্ধায় মাথা ঘুড়ে ঘাসের বিছানায়
পড়বো শুয়ে

চৈত্র বিড়াল

বারবার ফিরে আসে
চৈত্র!
সেই পাতা ঝড়া
প্রকৃতি
স্তব্ধ দুপুর
পুরো পাড়া ঘুমিয়ে
অথবা
ঘুমের ভান করে।
মাঝে মাঝে
কাক-চড়াইয়ের কোলাহল
তাদের থামাতে বিড়ালের আগমণ।

সময়টা চৈত্র,
একটি বিড়াল
মাঝ দুপুরে
প্রায়ই আসতো;
পা টিপে টিপে
বারান্দা গ্রীলের
কপাট খুলে
ধরতে যেতাম তাকে।
তারপর অবাক দৃষ্টিতে
চোখে চোখ;
কি অবুঝ পাপাচার
ক্ষণিকের স্বর্গসুখ।

সবাই জানতো
গিয়েছিলাম বিড়াল তাড়াতে
কিন্তু
সেতো বিড়াল নয়
প্রেয়সী।
চৈত্রের দুপুরে
জ্বলে পুড়ে
ঝড়ছে পাতা
জ্বলছে চোখ
পিপাসায় জিহবা
তবু
তোমার জন্য, কত না
প্রতীক্ষা।

সে সময় গেছে কখন
বারে বারে ফিরে আসে
চৈত্র।
কিন্তু তুমি
কোন দূর দেশে।

বিলসা পাড়ে যুবকের লাশ

মেঠো পথের আঁকাবাঁকা একটি গ্রাম
বট তরুর কায়ায় ছায়া তার যেন মম
মাঠে উড়ছে হলুদ রঙের পাতা
তার পাহাড়ায় এক কর্তা
পায়ের কাছে শুয়ে বিশ্বস্ত এক কুকুর
এমন গাঁয়ের পথে দিশান্তরী হয়েছে এক যুবক
বাজারের লোকেরা তাকে নিয়ে করছে কানাঘুষা
তাতে যুবকের কি আসে যায়।

কি মায়ায় সে পথ ভুলেছে
আর সকলের মত জানে না সেও
জিগেস করলে আকাশ পানে চেয়ে
জীবনের
না মেলা অংক ভুল করে আবারও
সবাই বলে পাগল
হ্যাঁ, পাগল
শুধু তার অপেক্ষায় দাওয়ায় বসে কাঁদে এক বৃদ্ধা
তাতে কার কি আসে যায়?
চায়ের দোকানে তাকে নিয়ে চলে কানাঘুষা
লোকে বলে এই কি জীবন?
তাতে কার কি আসে যায়?
শুধু তার অপেক্ষায় দাওয়ায় বসে কাঁদে এক বৃদ্ধা।

কোন এক কাকডাকা ভোরে
পায়রাগুলোর বাকুম বাকুমে
জাগতে শুরু করেছে গৃহস্থীরা
বাড়তে থাকে কোলাহল
দেখে
বিলসার পাড়ে পরে থাকে মরদেহ;
এমন গায়ে তার কিসের অভাব ছিল
কত শত প্রশ্নের তৃষ্ণায় গ্রামবাসী
পায় না উত্তর?
তাতে কাব্যের কি আসে যায়
শুধু তার অপেক্ষায় দাওয়ায় বসে কাঁদে এক বৃদ্ধা।

চন্দ্রকথা ২

ও চাঁদ, মায়াবী
তোর মায়ায় পৃথিবী উতাল
লেগেছে জোয়ার সাগর নদীই
কেমন মাতাল উপকূল কূল।

আজ রাত বড়ই মায়াবী
হু হু করে বইছে শীতল বাতাস
যেন কত কালের মৌসুমী

কৈফিয়ত

হয়ত অপেক্ষার প্রহর আর গুনবো না বলেই
একা থাকা
আর কারো হাসি শুনে অবাক হবো না বলেই
একা থাকা
শুধু সেই নুপুরের প্রতিধ্বনি শুনবো বলেই
একা থাকা
ভাবনার পৃথিবীতে নতুন স্বপ্ন দেখবো না বললেই
একা থাকা।


সামাজিক এই সমাজে আমি বড়ই অসামাজিক
তোমার শাষন বরনে হইনি মানুষ
তাই একা থাকা
একা মানে একা নয়
স্মৃতির অবাধ বিচরন
সেই ভাপসা গরম, পাবলিক বাসে ছুটে চলা
মেরিন রেস্তোরায় বিরিয়ানি
তারপর বৃষ্টিতে ভিজে ফেরা।

একা থাকা মানে একা নয়
স্মৃতিদের নিরন্তর খেলা
ইস্পাত আর পাথরের নিচে চাপা পরা কলিযুগ
এখনো ফিসফিস কথা কয়
যেখানে অনেক দূরে থেকেও খুব কাছে
হিসেবের খাতায় বেহিসেবি অংক কষবো না বললেই
একা থাকা

অফেরা সময়

এই পথে প্রতিদিন যাওয়া আসা
ফেরার ব্যকুলতা,

সব ফেলে একদিন
না ফেরার দেশে
আর আসতে পারবো না চেনা এই গেটটায়
চেনা এই বাড়িটা
চেনা ঘরটায়,

ফিরতে চাইলেই কি সব সময় ফেরা যায়।।

১১ বছর আগে

এত সেই চোখ
যে চোখে ডুবেছিলাম আমি
১১ বছর আগে।

ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত মানুষের ভীড়ে
দ্রুত পাশ কেটে যাওয়া দুটি রিকসা
সেই দুটি চোখে
আবার আটকে গেলো ২টি চোখ
১১ বছর পরে।

মুহুর্তেই থেমে গেলো পৃথিবীর গতি
হৃদয় যেন খুজে পেলো পুরোনো প্রেয়সীকে
হাহ্‌, ব্যস্ত নগরে বাস, হর্ন আর ট্রাফিকের ভীড়ে
মুর্হুতেই আবার এলোমেলো সব।

হারিয়ে গেলে তুমি
আর আমিও।

মনে পড়ে, ১১ বছর আগে__
কিছু বোঝার আগেই সেদিন
তোমার চোখে দিয়েছিলাম ডুব।

আমি ভিজলাম
আমি ভিজলাম
শুধু তুমিই আমায় জুড়ে।

মোহ বল, প্রেম বল
সবই ছিল হৃদয়ে
ঘৃণা বল, উপহাস বল
সবই ছিল তোমার;
তাতে আমার নেই কোন ভ্রুক্ষেপ
ও সবই তখন ছিল মিথ্যে।

কিছু কিছু গল্প
শেষ হয় না
কিছু কবিতা
ছন্দহীন
জীবনটাও
এ রকমই।